১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯২৯ – ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
১৪ ফেব্রুয়ারি। বাংলাকে গড়তে যারা তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন এমন একজন মহামানবের আজ শাহদাতবার্ষিকী। পাবনার মাওলানা আবদুস সুবহান এক অনন্য ব্যক্তিত্ব, একটি প্রতিষ্ঠান, একটি ইতিহাস। ১৯৬২ সাল থেকে এ জনপদের জনগণ তাঁর কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ তাকে বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন, যা পাবনার অন্য কোন নেতার ক্ষেত্রে হয়নি। তাঁর জীবনের মিশনই ছিল জনকল্যানমূলক কাজ; শিক্ষা, সেবা ও বৃত্তিমূলক কাজের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকার জনসাধারনকে শিক্ষিত করে তোলা এবং বেকারত্ব দূর করা।
মাওলানা আবদুস সুবহানকে ২০ সেপ্টেম্বর ২০১২ সালে ঢাকা থেকে পাবনা যাওয়ার পথে যমুনা সেতু এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে জালিম হাসিনা সরকার। এরপর তথাকথিত মানবতাবিরোধী মামলায় দীর্ঘদিন জালিম সরকারের মিথ্যা রায়ে কারাগারে আবদ্ধ থেকেছেন। প্রবীণ এই জিন্দাদিল মুজাহিদ কখনো জালিমের কাছে মাথানত করেননি। ফলস্বরুপ প্রতিটি জালিম আইয়ুব, শেখ মুজিব ও হাসিনা তাকে জুলুম নির্যাতনের মুখোমুখি করে। তিনি প্রতিটি মাফিয়া সরকারের বিরুদ্ধে তিনি লড়েছেন। বিনিময়ে ভয়ংকর নির্যাতনের মুখোমুখি হতে হয়েছে। শেখ হাসিনা এই অসুস্থ নেতাকে চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থাও করেননি। অবশেষে তিনি যখন মৃত্যুমুখে পতিত হন তখন তাঁকে বেড়ি ও হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালে এনে চিকিৎসার নামে আর বেশি নির্যাতন শুরু করে।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সরকার জামায়াত নেতৃত্বকে সাজা দেয়ার আয়োজন সম্পন্ন করে। ১৯৭৩ সালের আইনে সংশোধন এনে দলীয় তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগ ও সাজানো সাক্ষী দিয়ে কথিত মানবতাবিরোধী বিচারের রাজনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করে। এই বিচারের জন্য প্রণীত আইন ও বিধিমালা নিয়ে শুরু থেকেই দেশে-বিদেশে বিশেষজ্ঞগণ গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধাপরাধবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিফেন জে র্যাপ, আইনজীবীদের বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইট্স ওয়াচসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব ও সংস্থা এ নিয়ে আইন সংশোধনের জন্য নানা সুপারিশও দিয়েছে। কিন্তু সরকার তাতে কর্ণপাতই করেনি। সরকার তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে চিরতরে শেষ করে দেয়ার জন্য জাতীয় নেতৃবৃন্দকে একের পর এক হত্যা করেই চলছে। ইতোমধ্যে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল স্বীকার করেছেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তেই বিচার হচ্ছে।