আজ ১২ ডিসেম্বর। আব্দুল কাদের মোল্লা ভাইয়ের ৯ম শাহাদাত বার্ষিকী। বর্তমান কর্তৃত্ববাদী জালেম সরকার ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল শহীদ আবদুল কাদের মোল্লাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেছে। শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা আমৃত্যু বাংলাদেশে ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, লেখক,বিশিষ্ট সাংবাদিক,বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ এবং গবেষক হিসেবে দেশ ও জাতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। নব্বইয়ের দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তিনি লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, জনগণের ভোটাধিকার ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। কলম সৈনিক হিসেবে তিনি লেখনীর মাধ্যমে মানুষের বিবেকবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন।
তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ নির্দোষ। শুধুমাত্র জামায়াতে ইসলামীর নেতা হওয়ার কারণেই তাকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো মিথ্যা অভিযোগে দায়ের করা মামলার রায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মীরপুরের যে ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল সেই অভিযোগের অন্যতম সাক্ষী ছিলেন মোমেনা বেগম। আসল মোমেনা বেগম আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাননি। এমনকি রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা ১ মিনিটে তাঁর ফাঁসি কার্যকর করা হয়। তাঁকে ফাঁসি দেয়ার প্রায় দেড় বছর পর তাঁর রিভিউ আবেদন খারিজের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এসব ঘটনা থেকে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি বিচারের নামে কত বড় প্রহসনের শিকার হয়েছেন!
শহীদ আবদুল কাদের মোল্লা তাকে ফাঁসি দেয়ার পূর্বে বলে গিয়েছেন যে, সরকার আমাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিচ্ছে। আমার শরীরের প্রতি ফোটা রক্ত এ দেশের ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ইসলামী আন্দোলনে অনুপ্রাণিত করবে। ইসলামী আন্দোলনে তার অবদানের কথা আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি এবং তার শাহাদাত কবুল করার জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। সেই সাথে তিনি ইসলামী সমাজ গড়ার যে স্বপ্ন দেখতেন, তা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য মহান আল্লাহ আমাদেরকে হিম্মত এবং তাওফিক দান করুন।
ইসলামী আন্দোলনে তাঁর অবদানের কথা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে চিরদিন এবং তাঁর শাহাদাত লক্ষ্য লক্ষ্য দ্বীনের মুজাহিদদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে ফরিয়াদ আল্লাহ তায়ালা যেন উনার পরিবারবর্গকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক এবং উত্তম প্রতিদান দান করেন। আমীন।।